শ্যামনগর প্রতিনিধিঃ-
শ্যামনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে শেখ সহিদুর রহমানের যোগদানের প্রতিবাদে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছাত্র প্রতিনিধিরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ছাত্র প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, শেখ সহিদুর রহমান দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তার শ্যামনগর অফিসে বসার সুযোগ দেওয়া হবে না। তারা জানান, ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শ্যামনগরে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন এবং ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে পুনর্বাসনের কাজে লিপ্ত ছিলেন। এছাড়া, বরসা এনজিওর নামে স্থানীয় হাজারো মানুষের কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ তুলে দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ছাত্র প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা সদরের আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নে পরিচয়ে সহিদুর রহমান গত ১০ বছরে সমাজসেবা অফিসকে তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলেন।
বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন মুহাইমিনুল ইসলাম তানভীর, মাসুম বিল্লাহ, বিল্লাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, এম আব্দুল্লাহ, ওমর ফারুক, জাকারিয়া, সাগর, ইমন ও নুরুল হুদা প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ সহিদুর রহমান বলেন, “আমি মূলত শ্যামনগরে যোগদান করব না। যেহেতু ঢাকা থেকে আদেশ এসেছে, তাই কাগজপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আসতে বাধ্য হয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমি দূরে কোথাও বদলির জন্য আবেদন করব।” ছাত্র প্রতিনিধিদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি অফিসে যাইনি, তাই কিছু বলতে পারব না।” এরপর তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
জানা গেছে, শেখ সহিদুর রহমান সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চরদাহ গ্রামের বাসিন্দা শেখ আহম্মদ আলীর ছেলে। এলাকায় তিনি ‘চালাক ময়না’ নামে পরিচিত। একসময় আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মোস্তাক আহমেদ রবির অনুসারী হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমানে নিজেকে ক্যাবিনেট সচিবের ভাগ্নে বলে দাবি করছেন।
২০০৫ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগদানের পর উচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তর ও স্থায়ীকরণের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হন তিনি। চাকরি জীবনের শুরু থেকেই তিনি সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাতক্ষীরার পোস্ট অফিস মোড়ে তার বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে, যা দর্শনার্থীদের চমকে দেয়। বরসা এনজিও, সিভি হাসপাতাল ও চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্সে তার মালিকানার অংশ রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।