1. admin@dakkhinerbarta.com : Ashiqur Rahman : Ashiqur Rahman
  2. ashiqsmi2@gmail.com : Hossain Bin Aftab : Hossain Bin Aftab
  3. kaiumrajinfo@gmail.com : Abm Kaium Raj : Abm Kaium Raj
  4. nasirhossain01996277@gmail.com : Nasir Hossain : Nasir Hossain
  5. support@wordprees.org : support :
       
সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
শ্যামনগরের ভূরুলিয়ায় অন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে ছাত্রশিবিরের কর্মশালা অনুষ্ঠিত খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জামায়াতের আন্তঃইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন নূরনগর জামায়াতে ইসলামীর মাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার প্রতিবাদে শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের মানববন্ধন শ্যামনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, আটুলিয়া যুব ও ক্রীড়া বিভাগের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি শ্যামনগরে স্মার্ট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান – হাসপাতালের প্রশংসা

সুন্দরবন ভ্রমণ : আমাদের বৈঠা নৌকার অভিযান – মনিরুজ্জামান মনির

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

আমি মনির, সবে মাত্র ক্লাস টেনে পড়াশোনা করছি। আমাদের নির্বাচনি পরীক্ষা শেষ, ভাবতে লাগলাম কোনো ট্যুরে যাবো। তাই কলিজার বন্ধুগুলোকে সাথে নিয়ে বসে গেলাম আমাদের আড্ডা-মিটিং-এ। সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা সুন্দরবন যাবো। তবে অন্যদের মতো কোনো ইঞ্জিন লাগানো নৌকাতে করে নয়, আমরা যাবো বৈঠা নৌকা চালিয়ে।

 

আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, তার নাম সাইদুর। ওর বাড়িটা ছিলো নদীর ধারে, ওদের নৌকা ছিলো। তাই ওদের নৌকায় করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা বেশ কয়েকজন ছিলাম, তার মধ্যে ছিলো মিয়ারাজ — সে ছিলো আমাদের স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের একজন মেধাবী ছাত্র। তার গ্রুপের ছিলো আরো সদস্য — আইনুল, মাছুদ, আনিছুর।

এবার আসা যাক মানবিক বিভাগে, এ গ্রুপ থেকে গিয়েছিলাম আমি ওরফে মনির, সাইদুর, হিরন, কৃষ্ণ, আশিক, আসিফ, আব্দুল্লাহ, ইমরান।

 

তো এবার বর্তমানের কথায় ফেরা যাক। আমাদের মিটিং শেষ হলো, আমরা ঠিক করলাম সুন্দরবন যাবো। তাই আমরা নির্দিষ্ট দিনে সকলে সাইদুরদের বাড়িতে হাজির হলাম। গিয়ে সর্বপ্রথম সাইদুরের আম্মুর সাথে দেখা করলাম, আন্টিকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করলাম।

আমাদের প্ল্যান ছিলো, আমরা নদীতে নামবো, সবাই ভিজবো। তাই সাইদুরদের বাড়িতে গিয়ে সবাই পোশাক পরিবর্তন করে নিলাম।

আমরা সকাল ১১টার দিকে নৌকা নিয়ে রওনা দিলাম। নদিটা খুব বড়, নদিটার মাঝখান দিয়ে যাচ্ছি — এপার হলো বাংলাদেশ, ওপার হলো ভারত।

আস্তে আস্তে আমরা নদীর আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে চলে এলাম সেই প্রকৃতির লীলাভূমিতে, প্রকৃতির প্রাণ — আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, বা আমাদের বাংলায়, সুন্দরবন।

 

চারদিকে কেমন পাখিদের কুলকুল ধ্বনি, কেমন শরতের মতো হাওয়া বইছে। মনে এক অসাধারণ অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে, যা বলে বোঝানো যায় না — কেবল অনুভব করা যায়। আমি আবার গানপ্রিয় মানুষ, তাই আর দেরি না করে গান গাইতে শুরু করলাম।

গাইতে গাইতে সুন্দরবনের ভিতরে যাওয়ার পথ খুঁজতে থাকলাম এবং পেয়েও গেলাম।

কিছু না ভেবে সবাই বনের ভিতর প্রবেশ করলাম। নিস্তব্ধতা, ঝিঝি পোকার ডাক আর আমাদের পায়ের শব্দ ছাড়া আর কোনো আওয়াজ নেই বনের ভিতর।

আমাদের ভয় কাজ করতে লাগলো, কেননা এই বনেই তো বাস করে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ নানা ধরনের হিংস্র প্রাণী। তবে আমাদের সকলের একটা আশা ছিলো হরিণের দেখা পাওয়া।

কিন্তু সব আশা কি পূরণ হয়? আমাদেরও হলো না।

তবে মজার ঘটনা হলো, আমরা সেখানে ছাগলের পায়ের ছাপ দেখেছিলাম এবং মনে করেছিলাম এটা হয়তো হরিণের পায়ের ছাপ। আসলে ছাপটা হরিণেরই পায়ের ছাপ — কারণ ওই ঘন জঙ্গলে ছাগল আসবে কোথা থেকে?

 

এসব বলতে বলতে আমরা বনের অনেক ভিতরে চলে এসেছি। এবার ভয়টা যেন আরো বাড়তে লাগলো। তখন বাজে দুপুর ২টা।

কিন্তু আমরা এত ঘন জঙ্গলে ঢুকে গেছি যে আমাদের মনে হচ্ছে, সন্ধ্যা হয়ে গেছে।

সবাই ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমিও নিজের কালো রূপটাকে তুলে ধরলাম ক্যামেরার সামনে।

 

আমাদের হাসানোর জন্য হিরন ছিলো এক অদম্য গায়ক। তার কথায় আমাদের সব ভয় যেন দূর হয়ে গেলো।

আমরা এবার বনের ভিতর থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পেছনে আসতে শুরু করলাম।

বনের ভিতর থেকে বের হতে আমাদের আরো ত্রিশ মিনিটের মতো লেগেছে।

 

আমরা এবার নদীতে নামলাম। সকলেই এখন নদীর স্রোত উপভোগ করছি। সাতার জানতাম সবাই, তাই কারো কোনো ভয় ছিলো না।

তখন বাজে তিনটা। খুব ক্ষুধা পেয়ে গেছে। এখন কি করি?

সবচেয়ে আশ্চর্যজনক কথা হলো, আমরা ট্যুরে গেছি, কিন্তু কোনো টিফিনের ব্যবস্থা করা হয়নি! তাই কিছু করার নেই।

কাছে যা কিছু ছিলো, তাই দিয়েই সবাই ক্ষুধা নিবারণ করবো ঠিক করলাম।

 

তবে আমাদের জন্য একটা জিনিস খুবই বিপদজনক হয়ে উঠেছিলো — সেটা হলো ভাটার স্রোত।

কেননা আমরা আসার সময় জোয়ারে এসেছিলাম, আর ফেরার সময় যেতে হবে ভাটায়।

কিন্তু আমাদের মধ্যে সাইদুর ছাড়া আর কেউ ভালো নৌকা চালাতে পারে না। এজন্য আমরা আর সামনে এগোতে পারছিলাম না।

কারণ, একটা নৌকা আর অনেকগুলো মানুষ — স্রোতের বিপরীতে চালানো কখনোই সম্ভব না।

 

আস্তে আস্তে আমরা এসে গেলাম একটা দ্বীপে। সেখানে ছিলো দোকান। তাই মুড়ি-চানাচুর কিনে সবাই সেখানে দাঁড়িয়ে খেয়ে নিলাম।

কারণ, ক্ষুধার পেটে মুড়ি-চানাচুরগুলোও কোনো রেস্টুরেন্টের বিরিয়ানির চেয়ে কম মনে হচ্ছিলো না! ওইটাই ছিলো আমাদের বিরিয়ানি।

 

আমরা ফিরে যাচ্ছি নদীতে। স্রোতের সঙ্গে মিশেছে পাঁচ নদীর মোহনা। সূর্য প্রায় অস্তমিত — সুর্যের সেই লাল রশ্মি যেন মোহনার পানির উপর পড়ছে। সেই দৃশ্যটা অনেক সুন্দর লেগেছিলো।

আস্তে আস্তে পাঁচ নদীর মোহনা পার করে আমাদের শেষ গন্তব্যে এসে পৌঁছালাম — মানে সাইদুরদের বাড়ি।

 

আমাদের ফিরে আসার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিলো সাইদুরের।

কেননা, ও না থাকলে আজ আমরা কোথায় যেতাম, তার ঠিক ছিলো না।

আমরাও তাকে সাহায্য করেছিলাম, তবে তার অবদানকে স্বীকার না করে পারি না।

যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন এই বন্ধুর কথা মনে রাখবো সকলেই।

 

এসব ভাবতে ভাবতে সাইদুরের বাড়ি থেকে সবাই গোসল করে খেয়ে নিলাম এবং আন্টি এবং সাইদুরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমাদের সুন্দরবন জার্নি শেষ করলাম।

শেয়ার করুন

আরো খবর দেখুন
স্বত্ব © দক্ষিণেরবার্তা ২০২৪
ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।