ওমর ফারুক, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধুমঘাট গ্রামের শত শত মানুষ হাঁসার খাল উন্মুক্ত করার দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। খালটি (ফরম নং: ২২২, পৃষ্ঠাঃ ১৯) দীর্ঘদিন ধরে ইজারার আওতায় থাকায় এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, খালটি ইজারা দেওয়ার পর পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় ধানচাষ একপ্রকার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিবছরই রোপা আমনের সময় অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পানি জমে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চাষিরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
এছাড়া খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ দিয়ে ও নেট-পাটা বসিয়ে পানি চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সাধারণ মানুষ হাঁস পালন তো দূরের কথা, গরু ধোয়া বা গোসল করতেও খালে নামতে পারেন না। কেউ নামলে তাকে চুরি বা অনধিকার প্রবেশের অপবাদ দিয়ে হেনস্তা করা হয়।
স্থানীয় মৎস্যচাষিরাও জানান, অতিবৃষ্টির সময় খালের পানি সঠিকভাবে নিষ্কাশিত না হওয়ায় মাছের ঘের ডুবে গিয়ে তারা বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন। খালের পাশে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বেড়া দিয়ে সবজি চাষ করায় চলাচলেও সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে স্থানীয় জনগণকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খালটি মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার টাকায় ইজারা নিয়ে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিছু রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ রাখা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে ভয়ভীতি ও মামলার হুমকি দেওয়া হয়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও সাধারণ মানুষের সাথে একমত। ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সাইজুর রহমান, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শ্যামল কুমার মন্ডল এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাল উন্মুক্তের পক্ষে মত দিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায়, তারা ২০০ থেকে ৩০০ জন একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করেছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। তাদের দাবি, খালটি উন্মুক্ত ঘোষণা করে দ্রুত কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।
স্থানীয়দের একটাই আহ্বান — স্বাধীন দেশে শাসন নয়, চাই স্বাধীনতা। হাঁসার খাল জনগণের, এটা জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিন।