স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (এইচআরসি) মিশন চালু হচ্ছে। এটি দেশের জনগণের মধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করবে যে মিশন তারা সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে মানবাধিকার হরণকারী, গণহত্যাকারী ও জনগণের ম্যান্ডেটহীন অবৈধ সরকারের সাথে। এই দখলদার খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার বিভিন্ন দেশ ও বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন গোপন চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর করছে; যা দেশবাসীর সামনে প্রকাশ করছে না। এতে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে, সংবিধান লঙ্ঘনকারী এই সরকার এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিচ্ছে এবং এর মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইউএনএইচআরসি-এর মিশন যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে চায় তাহলে আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। সেক্ষেত্রে তাদের উচিত ছিল, ভবিষ্যতে নির্বাচিত একটি সরকারের সাথে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সমাজে বড় ধরনের সংলাপ হওয়া। কিন্তু তা হয়নি। তাছাড়া মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন বাংলাদেশে কেন কার্যালয় স্থাপন চায়, এই বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করা জরুরি বলেও আমরা মনে করি। কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে জাতিসংঘে আর্থিক বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে, এমন সময়ে নতুন কার্যালয় চালু করে কেন খরচ বাড়ানো হচ্ছে, এটি আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা জানি, যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের মিশন নেই, সেসব দেশেও তারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশ নিয়েও তারা কাজ করছে। তাহলে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক যে, একটি অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারের মাধ্যমে মিশন চালু করার উদ্দেশ্য কি? সরকার কি ইউএনএইচআরসি- এর সাথে যে কার্যাদেশের শর্ত (টার্মস অফ রেফারেন্স), যাতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে, তা জনগনের সামনে তুলে ধরেছে? এই লুকোচুরির অভিপ্রায় কি?
পৃথিবীতে মোট ১৯টি দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের পূর্ণ কার্যালয় রয়েছে। এই দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, সবগুলো দেশই গৃহযুদ্ধ বা যুদ্ধ পরিস্থিতি কিংবা জাতিগত সংঘাতে জর্জরিত। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— এই দেশগুলোতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপনের পরে সেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতির মোটেও অগ্রগতি হয়নি, বরং উল্টোটা ঘটেছে এবং দেশগুলো দীর্ঘমেয়াদী সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে বা যুদ্ধে জড়িয়ে গেছে। তাহলে অবৈধ দখলদার খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং কেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের মিশন চালু করতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করলো? দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমরা এই প্রশ্ন উত্থাপন করছি।
আমাদের আশঙ্কা— অবৈধ ইউনূস গং দেশকে সেই ধরনের গভীর সংকটের বা দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের দিকে বাংলাদেশকে ঠেলে দিচ্ছে; যা দেশবাসী মেনে নিবে না। এই অবৈধ দখলদার ও গণবিরোধী জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত জনগণের অধিকার হরণ করছে, নির্বিচারেন গণহত্যা চালাচ্ছে। তাই রক্তপিপাসু নরপিশাচ ফ্যাসিস্ট ইউনূস গংরা মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করবে, এরকম চিন্তা করা বাতুলতা মাত্র। বরং বাংলাদেশেকে বিদেশি শক্তির তাঁবেদার বানানো এবং শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ফেলে দেশকে দীর্ঘমেয়াদী সংকটের দিকে নিয়ে যাবে।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক