আজ, ২৭ সেপ্টেম্বর, সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার সোনার মোড়ে ভারতের রামগিরী মহারাজ ও বিজেপি নেতা রিতেশ রানে রাসুল (সঃ)-কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশের আয়োজন করে সুন্দরবন ইসলামিক মানবিক ফাউন্ডেশন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভে বক্তারা অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান এবং ভারত সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন, যদি এ অপরাধীদের বিচার করা না হয়, তাহলে মুসলিম উম্মাহ কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সোনার মোড় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল আলীম ফারুকী। তিনি বলেন, “ভারত যদি দ্রুত এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় না আনে এবং তাদের ফাঁসি না দেয়, তবে এর পরিণতি ভারতের জন্য ভয়াবহ হবে। মুসলিম উম্মাহ ইতিহাসের পাতা থেকে ভারতের অস্তিত্ব মুছে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।” তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়।
এছাড়া বক্তব্য প্রদান করেন মাওলানা রবিউল ইসলাম, আমির হুসাইন আমজাদ, বায়জিদ হোসেন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিল্লাল হোসেন ও মেহেদি হাসান। তারা সবাই ভারতীয় নেতাদের ইসলাম ও রাসুল (সঃ)-এর বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেন। মাওলানা রবিউল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “এ ধরনের ঘৃণ্য মন্তব্য শুধু মুসলিম জাতিকে অপমানিত করে না, বরং সমস্ত মানবতার বিরুদ্ধে এক অপরাধ।” আমির হুসাইন আমজাদও বলেন, “ভারত যদি এই অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা না করে, তবে এই ক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে, এবং এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।”
বক্তব্য শেষে শান্তিপূর্ণভাবে একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলে পুরো এলাকা। “রাসুল (সঃ)-এর অপমান মেনে নেব না”, “অপরাধীদের শাস্তি চাই” ইত্যাদি স্লোগানে তারা তাদের প্রতিবাদ জানান। সমাবেশ ও র্যালি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, কিন্তু এর মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট বার্তা দেন—তাদের ধৈর্য পরীক্ষা করা ঠিক হবে না।
বক্তারা জানান, যদি ভারত সরকার অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় না আনে, তবে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, রামগিরী মহারাজ গত সপ্তাহে একটি ধর্মীয় সভায় ইসলাম ও রাসুল (সঃ) সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেন, “ইসলাম একটি সহিংস ধর্ম” এবং রাসুল (সঃ)-এর জীবনকে বিকৃতভাবে তুলে ধরে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তার এই মন্তব্য ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়সহ সারা বিশ্বে মুসলমানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় তার বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি তুলেছে, যা বাংলাদেশেও প্রতিফলিত হয়েছে।